কপিরাইটিং করে আয় করা [বিস্তারিত টিউটোরিয়াল]

কপিরাইটিং কি?

কপিরাইটিং লিখে আয়

কপিরাইটিং হলো কোন একটি ধারনা, যেখানে একজন কপিরাইটার কোনো ধরনের এডভারটাইজিং বা মার্কেটিংয়ের জন্য একটি অনুলিপি তৈরি করে। এখানে অনুলিপি লেখার মানে এই যে, সে কোনো একটি পণ্যের প্রমোট করার জন্য লেখালেখি করে ওয়েবসাইট বা বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে বিলিয়ে দেয়। সহজ ভাষায় বলি, ধরুন আপনি কোনো পন্য অনলাইন মার্কেটে সেল করবেন। এক্ষেত্রে আপনার সে প্রোডাক্ট বা পণ্যের প্রমোশনে নজর দিয়ে লেখালেখি করে নিজের ওয়েবসাইটে বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় [যেমন, ফেসবুক, টুইটার বা ইন্সট্রাগ্রামে] এ বিষয়ে লিখতে হবে। যেনো প্রোডাক্টটির ভালো বিক্রি হয়। এটি এক ধরনের কপিরাইটিং ও এবং একটি কাজ অথবা ধারনা। এর আরেকটি মানে হলো কাউকে সে প্রোডাক্টটি কেনার জন্য প্রোডাক্টটির উপর তার বিশ্বাসকে গড়ে তোলা, এটাই কপিরাইটিং এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।


কারা কপিরাইটিং করতে পারেন?

কপিরাইট কি


যাদের লেখালেখির ব্যাপারে শখ রয়েছে তারা চাইলে এই কাজে জয়েন দিতে পারেন। যদি কোনো প্রডাক্ট সেল করার  ক্ষেত্রে  আপনার  ভালো অভিজ্ঞতা থাকে বা আপনি শখের বশে এটি করতে চান, তাহলে কপিরাইটিং করতে পারেন। খুব ভালো ধরনের আয় করার সুযোগ পাবেন।



কি ধরনের দক্ষতা থাকা  লাগবেঃ


কপিরাইটিং একটি প্রফেশনাল কাজ! কপিরাইটিং চাইলে যে কেউ কোনোরুপ দক্ষতা ছাড়া করতে পারে না। এর জন্য প্রোডাক্টটির ভালো রিভিও এর পাশাপাশি, প্রোডাক্টটির ভালো খারাপ দিক সম্বন্ধে ধারণা রাখতে হবে। যেকোনো একটি পণ্যের উপর অনুলিপি তৈরি বা কপিরাইটিং করার জন্য দক্ষতার প্রয়োজন পড়বেই। দক্ষ কপিরাইটাররা জানে কিভাবে প্রোডাক্টটির ভালো এডভারটাইজিং এর পাশাপাশি এর ভালো রিভিও আকর্ষনীয় ভাবে ভিজিটর বা নেটিজেনদের কাছে তুলে ধরতে হয়। একজন কপিরাইটারের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা গুলো নিম্নরুপ।



১)কোনো একটি মার্কেটিং প্রোডাক্টকে বর্ণনা করে এমন ভাবে কপিরাইটিং করতে হবে যেটি কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। যেমনঃ কোনো প্রোডাক্টের ভালো দিকগুলো বা এ প্রোডাক্টের প্রয়োজনীয় দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। যাতে কাস্টমাররা এ প্রোডাক্টটি ব্যবহারে উতসাহিত হয়।



২)প্রোডাক্ট বর্ণনায় অবশ্যই প্রোডাক্টটির ইতিবাচক বৈশিষ্ট এবং কাস্টমারদের কোন কোন সমস্যা ওই প্রোডাক্টটি নিমিষেই সমাধান করে দিতে পারে তা থাকা চাই। অথবা প্রোডাক্টটির কোনো সুবিধা ও প্রোডাক্টটির অনুপস্থিতিজনিত সমস্যা গুলো তুলে ধরতে হবে।



৩)কপিরাইটিং এর জন্য প্রথমে এর মূল কনসেপ্ট এবং যুক্তিকে অনুধাবন করতে হবে। যেমনটা বেশিরভাগ প্রফেশনালরা করতে যথেস্ট স্কীল্ড। যেটি একটি সফল কপিরাইটিং এর জন্য উপযুক্ত।



অনলাইনে কপিরাইট


কখন কপিরাইটিং শুরু করবেনঃ


কপিরাইটিং এর জন্য কোনো নিজস্ব  সময় প্রয়োজন নেই,  এটি যেকোনো সময় শুরু করে দিতে পারেন। এর জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে যেখানে আপনি তাদের পণ্যের প্রমোশনের জন্য অনুলিপি লিখে ভালো মূল্যে প্রোডাক্টের মালিকের কাছে বিক্রি করতে পারেন।. 



কপিরাইটিং করে অনলাইনে আয়ের উপায়



কিভাবে আয় করবেন  [সম্পুর্ন বর্ণনা]


একজন ভালো কপিরাইটার মোটা অংকের টাকা আয় করতে পারে শুধুমাত্র একটি সিঙ্গেল অনুলিপি তৈরি করার মাধ্যমে। শুরুতে বেশি আয় করতে পারার সম্ভাবনা কম। এর কারণ প্রথমত এই যে, প্রফেশনাল কপিরাইটাররাই ভালো ভালো অনুলিপি লিখতে পারে, বেশিরভাগ কন্ট্রাক্ট ওরাই নেয়। বেশিরভাগ প্রোডাক্টের মালিক ওই প্রফেশনাল ও ভালো র‍্যাংকের কপিরাইটারদের কাছেই যায় কপিরাইটিং এর জন্য। কেননা তারা তাদের ব্যবসায়ে লাভবান হওয়ার জন্য একটি ভালো অনুলিপি তৈরি করে এডভার্টাইজিং শুরু করাতে চায়, কোনো ঝুকি বা শুধু শুধু অর্থ খরচ করতে চায় না। এক্ষেত্রে নতুন কপিরাইটারদের নিজের যোগ্যতা দেখিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। আপনি শুরুতে ছোটো প্রোডাক্টের কপিরাইটিং লিখে এগিয়ে যান। আপনার ভালো কপিরাইটে, আপনার রেটিংস বাড়বে, পাশাপাশি ভালো সুযোগ আসবে। যখনই আপনি কপিরাইটিং এর ব্যাপারে এক্সপার্ট হয়ে যাবেন তখন আপনার আয় করার ব্যাপারে কেউ নাক গলাতে পারবে না। আপনি আপনার মতো আয় করে যেতে থাকবেন।



যখন আপনি কপিরাইটিং এর ব্যাপারে ভালো এক্সপার্ট হয়ে যাবেন তখন আপনি প্রতি ১০০ অনুলিপি তৈরী করার জন্য ১ হাজারেরও বেশি ডলার আয় করা শুরু করবেন। মনে রাখবেন কপিরাইটিং করার জন্য আপনি শুধুমাত্র নিজের দক্ষতা ব্যবহার করে প্রোডাক্টের সম্পুর্ন ভালো দিকগুলো মাথায় নিয়ে ভালো একটি অনুচ্ছেদ লিখে এর সাথে আকর্ষনীয় কথাবার্তা লিখে দিবেন। এরজন্য আপনার ব্যাকরণগত দিকে দক্ষ হতে হবে। ইংরেজী কপিরাইটারদের সংখ্যা প্রচুর। কাজেই সেখানে ভালো সংখ্যক প্রতিযোগী আছে। Blancer এর মতো বাংলা ফ্রীল্যান্সিং সাইটে গিয়ে বাংলাদেশী প্রোডাক্টের জন্য কপিরাইটিং করা শুরু করতে পারেন। কপিরাইটিং করার জন্য আপনি ইউটিউবে গিয়ে আরো ইংরেজী ভিডিও টিউটোরিয়াল বা ইংরেজী ব্লগ আরো দেখতে পারেন। বিষয়টি কম্পলিকেটেড হওয়ার কারণে এ সম্পর্কে আরো ভালো ধারণা নেয়া দরকার।



একজন কপিরাইটারের আয়ঃ


একজন সাধারন সারির কপিরাইটার প্রতিটি কপিরাইটিং এর জন্য ৫ ডলার বা আনুমানিক ৪৫০ টাকা করে আয় করে। এভাবে মাসিক ৫০-১০০ টি পর্যন্ত কপিরাইটিং করে। সবমিলিয়ে ২৫ থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত আয় করে শুধুমাত্ত্র তার মেধার গুনে। কপিরাইটারদের জন্য বাংলাদেশে খুবই কম ব্যবস্থা করা আছে। কিন্তু কোনো সমস্যা নেই, আন্তর্জাতিক মার্কেটিং্যে এর অনেক প্রয়োজনীয়তা আছে। ফ্রিল্যান্সিং সাইটে আপনি ইংরেজি কিংবা বাংলা কপিরাইট লেখার জন্য প্রচুর আয় করতে পারবেন।


কিভাবে দক্ষ কপিরাইটার হবেন? 


অনলাইনে আয়



কতগুলো গুরুত্বপুর্ণ টিপ্সঃ


আপনি যে কোন ধরনের ছোটো খাটো বা ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কারো প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য অনুলিপি তৈরি করা শুরু করতে পারেন। এবং সেগুলো প্রমোশন করতে পারেন। তারপর আপনার অনুলিপি তৈরীর সক্ষমতা বা রেজাল্ট কি হলো সেটার ব্যাপারে অবগত হতে পারেন এবং ভাল প্রচেষ্টা চালাতে পারেন।


এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং সাইটেও একজন কপিরাইটিং স্কিল সম্পন্ন মানুষের প্রয়োজন পড়ে। যদি কপিরাইটিং স্কিল থাকে তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করতে পারবেন।সেখানে কপিরাইটিং বলে একটি আলাদা প্ল্যাটফর্ম আছে যেখানে আপনি একজন কপিরাইটার হয়ে আয় করতে পারবেন।


বাংলাদেশি ফ্রীল্যান্সিং সাইট Blancer এতেও আপনি কপিরাইটিং করে আয় করা শুরু করতে পারেন। এখানে বাংলা ভাষায় কপিরাইটিং করতে পারবেন। এটি সম্পুর্ন বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং সাইট, এমনকি এখানে বিকাশে পে আউট করা হয়।


কপিরাইটিং করার নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে যেখানে কপিরাইটার হিসেবে কাজ করতে পারেন। সেগুলো তে আপনি টাকায় করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যেমনঃ


১/Iwriter.com


২/ Textbroker.com


৩/Writeraccess.com


সাইটগুলো গুগলে সার্চ করে বা সাইটের নামে একটি ছোটো খাটো ক্লিক করে সাইন আপ হয়ে গিয়ে কাজ করা শুরু করতে পারেন। চেস্টা আর ধৈর্‍্যই সর্বোত্তম উপায়। এ দুটোর মধ্য দিয়ে আপনিও কোনো দিন বিশ্ব র‍্যাংকিং্যের টপ কপিরাইটারদের মধ্যে একজন হতে পারেন। আর হ্যা, এটা তো বলাই হয় নি ,যে কপিরাইটার হওয়ার জন্য গ্রামারটিক্যালি স্ট্রং হতে হয়। উপরের ওয়েবসাইট গুলো ইন্টারন্যাশনাল সাইট। কাজেই এখানে টাকা ডলারে পে আউট করতে পারবেন পেপাল অথবা ব্যাংকের ক্রেডিট বা ডেভিট কার্ডের মাধ্যমে। আপনি যদি একজন গোছানো ব্লগার হোন, তাহলে আপনিও চাইলে ভালো কপিরাইটার হতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

Post a Comment

কমেন্ট করার মিনতি করছি। আমরা আপনার কমেন্টকে যথেস্ট মূল্য প্রদান করি। এটি আমাদের সার্ভিসের অংশ।

তবে কোনো ওয়েবসাইট লিংক প্রকাশ না করার অনুরোধ রইল।

Previous Post Next Post